বাংলাদেশি নাগরিকদের জন্য সার্বিয়ায় কাজ করার অন্যতম বৈধ উপায় হলো ওয়ার্ক পারমিট ভিসা, যা টাইপ ডি ভিসা নামেও পরিচিত। এই নিবন্ধে বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা পাওয়ার ধাপ, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনাগুলো বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়েছে।
📝 ওয়ার্ক পারমিট ভিসা সম্পর্কে সাধারণ তথ্য
সার্বিয়ায় কাজ করতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি নাগরিকদের প্রথমে টাইপ ডি (D) ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ভিসা যা সাধারণত ৯০ থেকে ১৮০ দিনের জন্য প্রদান করা হয়। টাইপ ডি ভিসা পাওয়ার পর সার্বিয়ায় পৌঁছে ওয়ার্ক পারমিট এবং টেম্পোরারি রেসিডেন্স পারমিটের জন্য আবেদন করতে হয়।
🛂 গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
-
দূতাবাস: বাংলাদেশে সার্বিয়ার কোনো দূতাবাস নেই। বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা আবেদন ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত সার্বিয়ান দূতাবাসে জমা দিতে হয়।
-
অনলাইন আবেদন: আপনি অনলাইনেও টাইপ ডি ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
-
ওয়ার্ক পারমিট: সার্বিয়ার কোনো প্রতিষ্ঠানের স্পনসরশিপের মাধ্যমে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায়। নিয়োগকর্তাকে স্থানীয় শ্রমবাজার যাচাই করে প্রমাণ করতে হবে যে ঐ পদের জন্য উপযুক্ত সার্বিয়ান নাগরিক নেই।
-
প্রসেসিং সময়: টাইপ ডি ভিসা প্রসেস করতে সাধারণত ৭-৩০ দিন এবং ওয়ার্ক পারমিট পেতে প্রায় ১৫-৩০ দিন সময় লাগে।
📄 ওয়ার্ক পারমিট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
-
পাসপোর্ট
-
কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ থাকতে হবে
-
অন্তত দুটি ফাঁকা পৃষ্ঠা থাকতে হবে
-
পাসপোর্টটি গত ১০ বছরের মধ্যে ইস্যু হতে হবে
-
-
ভিসা আবেদন ফর্ম
-
সঠিকভাবে পূরণকৃত টাইপ ডি ভিসা আবেদন ফর্ম
-
অনলাইনে পূরণ অথবা ডাউনলোড করে হাতে পূরণ করা যেতে পারে
-
-
নিয়োগকর্তার আমন্ত্রণপত্র
-
সার্বিয়ান কোম্পানির অফিশিয়াল প্যাডে ইস্যুকৃত চুক্তিপত্র
-
চাকরির ধরণ, সময়কাল, বেতন ও কাজের অবস্থান উল্লেখ থাকতে হবে
-
-
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
-
বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক ইস্যুকৃত
-
ইংরেজিতে অনূদিত ও নোটারাইজড থাকতে হবে
-
-
আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণ
-
সর্বশেষ ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অর্থনৈতিক সক্ষমতার দলিল
-
-
স্বাস্থ্য বীমা
-
কমপক্ষে ৩০,০০০ ইউরো কভারেজসহ আন্তর্জাতিক মেডিকেল ইনস্যুরেন্স
-
সার্বিয়ায় ভ্রমণের সময়কাল পর্যন্ত কভার করতে হবে
-
-
ছবি
-
দুটি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি
-
সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, ৩৫ মিমি × ৪৫ মিমি, মুখের ৮০% স্পষ্ট হতে হবে
-
-
কভার লেটার
-
আবেদনকারীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর, যাত্রার উদ্দেশ্য, সময়কাল এবং খরচ বহনের বিবরণসহ একটি অফিসিয়াল চিঠি
-
এটি সার্বিয়ান দূতাবাস, নয়াদিল্লির উদ্দেশ্যে লেখা হতে হবে
-
-
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা
-
সংশ্লিষ্ট চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় সার্টিফিকেট
-
পেশাগত অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
-
-
ভিসা ফি
-
নির্ধারিত ভিসা ফি জমা দিতে হবে (সাধারণত ৪,০০০–৮,০০০ টাকা সমমান)
-
অনলাইন অথবা দূতাবাসে প্রদান করা যায়
📌 বিশেষ নির্দেশনা
-
সমস্ত নথিপত্র ইংরেজি বা সার্বিয়ান ভাষায় অনূদিত ও নোটারাইজড হতে হবে
-
বাংলা ডকুমেন্ট গ্রহণযোগ্য নয়
-
দূতাবাস অতিরিক্ত ডকুমেন্ট বা সাক্ষাৎকারের জন্য আবেদনকারীকে ডাকতে পারে
-
ভিসা আবেদন করার পূর্বে সার্বিয়ান নিয়োগকর্তাকে স্থানীয় শ্রম বাজার যাচাই সম্পন্ন করতে হবে
📋 আবেদন প্রক্রিয়া
১. চাকরির অফার সংগ্রহ করুন
সার্বিয়ার কোনো কোম্পানি থেকে একটি চাকরির অফার পেতে হবে। এই কোম্পানিটি আপনাকে স্পন্সর করবে এবং স্থানীয় NES (National Employment Service)-এর মাধ্যমে একটি লেবার মার্কেট টেস্ট সম্পন্ন করবে।
২. অনলাইন আবেদন পূরণ
টাইপ ডি ভিসার জন্য নির্ধারিত ওয়েবসাইটে গিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে আবেদন ফর্ম পূরণ করুন এবং প্রয়োজনীয় কাগজ স্ক্যান করে আপলোড করুন।
৩. নথিপত্র জমা দিন
আবেদন সাবমিটের পরে, আপনার পাসপোর্ট ও সকল নথিপত্র ভারতের নয়াদিল্লিতে সার্বিয়ান দূতাবাসে জমা দিতে হবে। আপনি চাইলে একজন প্রতিনিধি দিয়েও জমা দিতে পারেন।
৪. ভিসা অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করুন
সাধারণত ২ থেকে ৪ সপ্তাহের মধ্যে আপনার ভিসা প্রসেস শেষ হবে। অনুমোদিত হলে পাসপোর্টে টাইপ ডি ভিসা স্ট্যাম্প করে আপনাকে ফেরত দেওয়া হবে।
✅ উপসংহার
সার্বিয়া একটি দ্রুত বিকাশমান ইউরোপীয় দেশ যেখানে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা বাড়ছে। বাংলাদেশ থেকে সার্বিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসার মাধ্যমে চাকরির সুযোগ গ্রহণ করা একদিকে যেমন সম্ভাবনাময়, তেমনি সঠিক প্রক্রিয়া না জানলে জটিলও হতে পারে। তাই প্রতিটি ধাপ সঠিকভাবে অনুসরণ করে আবেদন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
আপনার সার্বিয়া ওয়ার্ক ভিসার জন্য পেশাদার সহায়তা চাইলে আমাদের “Dream Abroad International” টিম প্রস্তুত আছে।
📞 মোবাইল: +974 71382220
📧 ইমেইল: dreamabroadinternational@gmail.com
🌐 ওয়েবসাইট: dreamintcs.com