বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা আবেদন বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা আবেদন

বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা আবেদন গাইড ২০২৫

এস্তোনিয়া, উত্তর ইউরোপের একটি ছোট কিন্তু প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত দেশ, যা পরiexport, শিক্ষা, এবং ব্যবসার জন্য জনপ্রিয়। বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভ্রমণের জন্য ভিসা আবেদন একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এস্তোনিয়া শেনজেন এলাকার সদস্য হওয়ায়, স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণের জন্য শেনজেন ভিসা (C Type) এবং দীর্ঘমেয়াদী ভ্রমণের জন্য D Type ভিসা প্রয়োজন। এই নিবন্ধে আমরা বাংলাদেশ থেকে এস্তোনিয়া ভিসা আবেদনের ধাপে ধাপে প্রক্রিয়া, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিয়ে আলোচনা করব।

এস্তোনিয়া ভিসার প্রকারভেদ

এস্তোনিয়ার জন্য প্রধানত দুই ধরনের ভিসা প্রযোজ্য:

  1. শেনজেন ভিসা (C Type): স্বল্পমেয়াদী ভ্রমণের জন্য (৯০ দিনের মধ্যে), যেমন পর্যটন, ব্যবসা, বা পরিবার/বন্ধুদের সাথে সাক্ষাৎ। এই ভিসা শেনজেন এলাকার ২৭টি দেশে ভ্রমণের অনুমতি দেয়।

  2. ন্যাশনাল ভিসা (D Type): দীর্ঘমেয়াদী ভ্রমণের জন্য (৯০ দিনের বেশি), যেমন পড়াশোনা, কাজ, বা পারিবারিক পুনর্মিলন।

এস্তোনিয়া ভিসা আবেদন লিংক

বাংলাদেশে এস্তোনিয়ার কোনো দূতাবাস নেই। তাই, শেনজেন ভিসা (C Type) আবেদনের জন্য জার্মান দূতাবাসের অধীনে VFS Global-এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। অফিসিয়াল লিংক:
https://visa.vfsglobal.com/bgd/en/deu/

দীর্ঘমেয়াদী ভিসা (D Type) আবেদনের জন্য ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত এস্তোনিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করতে হবে:
https://newdelhi.mfa.ee/

আবেদন ফরম

  • শেনজেন ভিসা ফরম (C Type): VFS Global ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করুন:
    https://visa.vfsglobal.com/one-pager/germany/bangladesh/english/pdf/schengen-visa-application-form.pdf

  • ন্যাশনাল ভিসা ফরম (D Type): এস্তোনিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করুন:
    https://eelviisataotlus.vm.ee/

ফরম পূরণের পর প্রিন্ট করে স্বাক্ষর করতে হবে।

এস্তোনিয়া ভিসা আবেদনের ধাপসমূহ

শেনজেন ভিসা (C Type)

  1. ভিসার ধরন নির্বাচন করুন: পর্যটন, ব্যবসা, বা পরিবার সাক্ষাতের উদ্দেশ্য নির্ধারণ করুন।

  2. VFS Global ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন: উপরের লিংক ব্যবহার করে অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।

  3. আবেদন ফরম পূরণ করুন: শেনজেন ভিসা ফরম সঠিকভাবে পূরণ করে প্রিন্ট করুন।

  4. প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করুন: নিচে উল্লেখিত কাগজপত্র প্রস্তুত করুন।

  5. অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করুন: VFS Global-এর মাধ্যমে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।

  6. বায়োমেট্রিক তথ্য জমা দিন: VFS সেন্টারে গিয়ে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ছবি প্রদান করুন।

  7. ভিসা ফি পরিশোধ করুন: শেনজেন ভিসার ফি ৮০ ইউরো (প্রায় ৯,৬০০ টাকা) + VFS সার্ভিস ফি ১৫ ইউরো।

  8. আবেদন ট্র্যাক করুন: VFS Global ওয়েবসাইটে রেফারেন্স নম্বর দিয়ে স্ট্যাটাস চেক করুন।

ন্যাশনাল ভিসা (D Type)

  1. এস্তোনিয়া দূতাবাসে যোগাযোগ করুন: নয়াদিল্লিতে এস্তোনিয়া দূতাবাসে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।

  2. আবেদন ফরম পূরণ করুন: এস্তোনিয়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে ফরম ডাউনলোড করুন।

  3. কাগজপত্র জমা দিন: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ ফরম জমা দিন।

  4. ফি পরিশোধ করুন: ফি সাধারণত ১০০-১২০ ইউরো।

  5. প্রসেসিং অপেক্ষা করুন: প্রক্রিয়াকরণে ৩০-৬০ দিন সময় লাগতে পারে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

শেনজেন ভিসা (C Type)

  • পাসপোর্ট: ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদী এবং ২টি ফাঁকা পৃষ্ঠা।

  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি: ২ কপি (৩৫ মিমি x ৪৫ মিমি, সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড, ৬ মাসের মধ্যে তোলা)।

  • আবেদন ফরম: পূরণকৃত এবং স্বাক্ষরিত।

  • জাতীয় পরিচয়পত্র: NID কার্ডের ফটোকপি।

  • ব্যাংক স্টেটমেন্ট: ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট (প্রতিদিন ৭০ ইউরো খরচ বহনের প্রমাণ)।

  • ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স: ৩০,০০০ ইউরো কভারেজ সহ শেনজেন এলাকায় বৈধ।

  • ফ্লাইট ইটিনারারি: রিটার্ন টিকিটের কপি।

  • হোটেল বুকিং: থাকার প্রমাণ।

  • আমন্ত্রণ পত্র: পরিবার/বন্ধুর কাছ থেকে (প্রযোজ্য হলে)।

  • কভারিং লেটার: ভ্রমণের উদ্দেশ্য ও খরচ বহনের বিবরণ।

  • অন্যান্য: চাকরির NOC, ব্যবসার লাইসেন্স, বা শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল/কলেজের চিঠি।

ন্যাশনাল ভিসা (D Type)

  • পাসপোর্ট: ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদী।

  • পাসপোর্ট সাইজ ছবি: ২ কপি।

  • আবেদন ফরম: পূরণকৃত এবং স্বাক্ষরিত।

  • ভর্তির প্রমাণ: বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাডমিশন লেটার (ছাত্রদের জন্য)।

  • আর্থিক প্রমাণ: প্রতি মাসে ৫০০ ইউরো বা বৃত্তির প্রমাণ।

  • ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্স: শেনজেন এলাকায় বৈধ।

  • থাকার প্রমাণ: হোস্টেল বা ভাড়ার চুক্তি।

  • পুলিশ ক্লিয়ারেন্স: অপরাধমুক্তির প্রমাণ।

  • মেডিকেল সার্টিফিকেট: প্রয়োজন হলে।

ভিসা প্রসেসিং সময় ও খরচ

  • শেনজেন ভিসা (C Type): প্রক্রিয়াকরণে ১৫-৩০ দিন সময় লাগে। ফি: ৮০ ইউরো + ১৫ ইউরো VFS ফি (মোট প্রায় ১০,০০০-১২,০০০ টাকা)।

  • ন্যাশনাল ভিসা (D Type): প্রক্রিয়াকরণে ৩০-৬০ দিন সময় লাগতে পারে। ফি: ১০০-১২০ ইউরো (প্রায় ১২,০০০-১৫,০০০ টাকা)।

  • অতিরিক্ত খরচ: ডকুমেন্ট অনুবাদ, নোটারি, এবং ট্রাভেল ইন্স্যুরেন্সের জন্য ৫০,০০০-১,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত লাগতে পারে।

গুরুত্বপূর্ণ টিপস

  • আগাম আবেদন করুন: ভ্রমণের কমপক্ষে ৪-৬ সপ্তাহ আগে আবেদন করুন।

  • সঠিক কাগজপত্র: সমস্ত ডকুমেন্ট ইংরেজিতে অনুবাদ ও নোটারি করুন।

  • অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং: VFS Global-এর মাধ্যমে সময়মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন।

  • আর্থিক প্রমাণ: পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য দেখানো গুরুত্বপূর্ণ।

  • প্রতারণা এড়িয়ে চলুন: শুধুমাত্র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট বা লাইসেন্সপ্রাপ্ত এজেন্সি ব্যবহার করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *